খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ

Post Image

নেতৃত্বে কোন্দলের জের ধরে পাল্টা কমিটি গঠনের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্যতম বৃহৎ আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট্রের (ইউপিডিএফ) ডাকে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলছে। জেলা আভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লা সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে অবরোধের সমর্থনে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করছে ইউপিডিএফ’র নেতাকর্মীরা।

অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে হাজারো জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীসহ শত শত পর্যটক। অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কায় নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে সতর্ক অবস্থায়।

ইউপিডিএফ’র প্রধান প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, অপহরণ, জাতীয় দিবস বর্জনসহ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতি-অনিয়ম রয়েছে। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের ভিন্নমত পোষনকারীরা বুধবার (১৫ নভেম্বর) খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা ও জলেয়া চাকমা তরু’র নেতৃত্বে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে আলাদা সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

নতুন গঠিত ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক কমিটিকে রাষ্ট্রীয় মদদে নব্য মুখোশ-বোরকা বাহিনী আখ্যায়িত করে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ মাদক-সন্ত্রাস দুর্বৃত্ত প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তাৎক্ষনিক খাগড়াছড়িতে লাঠি মিছিল ও সমাবেশ করে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ আহবান করে।

উল্লেখ,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির স্বাক্ষরের ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গেরিলা নেতা সন্তু লারমার নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পন করে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা। আর ওই দিনই প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ানে শত শত পতাকা উত্তোলন করে অস্ত্র সমর্পন অনুষ্ঠানকে ধিক্কার জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবীতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) গঠিত হয়। শুরু হয় সন্তু ও প্রসীতের নেতৃত্বে দুই সংগঠনের আধিপত্য রক্ষার লড়াই।

২০০৮ সালে জেএসএস ভেঙ্গে সুধা সিন্দু খীসার নেতৃত্বে গঠিত হয় জেএসএস (এমএন) গ্রুপ। এবার শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘাত। কখনো জেএসএস-ইউপিডিএফ আবার কখনো জেএসএস (সন্তু)-জেএসএস(এমএন)। কখনো নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে। এই সংঘর্ষে এ প্রাণ হারিয়েছে পাহাড়ের অন্তত সাড়ে ৬শ শতাধিক প্রাণোচ্ছল যুবক। এছাড়াও সহস্রাধিক আহত হয়েছে।